ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকারি চাকরি আইন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভে কর্মচারীরা ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড ৬ জনের যাবজ্জীবন বহাল কালো টাকা সাদা করার বিধান সংস্কারের সম্পূর্ণ বিপরীত-টিআইবি দূরত্ব ঘুচিয়ে চমৎকার জুলাই সনদ তৈরির প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার সারাদেশে একযোগে ২৫২ বিচারককে বদলি টেকসই অর্থনীতির বাজেট এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বঞ্চনার গল্প যেন অরণ্যেরোদন চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা রাষ্ট্র সংস্কারে উপেক্ষিত নারী তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু-আইন উপদেষ্টা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রথমবারের মতো বিটিভির স্টুডিও থেকে হচ্ছে বাজেট ঘোষণা ঘাটতি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে নতুন বাজেট আজ দুধ শুধু পণ্য নয় এটি সংস্কৃতির অংশÑ মৎস্য উপদেষ্টা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি পাহাড় ধসের ঝুঁকি সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু বিজিএমইএ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ‘ফোরাম’ প্যানেল বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ জাপা চেয়ারম্যানসহ ২৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা

রেল ট্রানজিট ইস্যুতে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি

  • আপলোড সময় : ৩০-০৬-২০২৪ ০৪:০৪:৩০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩০-০৬-২০২৪ ০৪:০৫:৫২ অপরাহ্ন
রেল ট্রানজিট ইস্যুতে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি
দীর্ঘদিন পর সরকারবিরোধী নানা ইস্যুতে রাজপথে উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতি। এরইমধ্যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, সর্বশেষ গতকাল শনিবার দেড় কিলোমিটার দূরত্বে পৃথক পৃথক কর্মসূচিও পালন করেছে দল দুটি। এর মধ্য দিয়ে ভারতকে রেল ট্রানজিট দেয়ার বিষয়টিকে বড় ধরনের রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করে ফায়দা নিতে চাইছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। এসব দলের নেতারা মনে করছেন সামনের দিনগুলোতে এটিই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যু। একই ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা দেখা যাচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে। তবে এসব সমালোচনাকে পাত্তা দিচ্ছে না টানা চার মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগ। এই ইস্যুতে কাউকে ফায়দা লুটতে দেবে না বলেও সাফ জানিয়েছেন দলটির শীর্ষপর্যায়ের নেতারা। তারা বলছেন, এগুলো বিরোধীদের পলিটিক্যাল প্রোপাগান্ডা যার সাথে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা নেই। এসব অপপ্রচার মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
রেল ট্রানজিট চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সংযোগকারী রেল ট্রানজিট সমঝোতা চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গত বুধবার (২৬ জুন) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে রেল মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন সচিব বরাবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সংঘাত এড়াতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মাহমুদুল হাসান। আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে শত্রুতা নয় নীতি অনুসরণ করে আসছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সংঘাত ও সহিংসতা থেকে নিজেকে সুরক্ষার জন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর সাথে ব্যালেন্স অব পাওয়ার (Balance of Power) নীতি অনুসরণ করে আসছে। কিন্তু ২০২৪ সালের জুনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রেল ট্রানজিট সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পাওয়ার নীতি হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে ভারতের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের মধ্যে রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা নতুন কিছু নয় । কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর অবস্থা স্বাভাবিক নয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী রয়েছে, যারা স্বাধীনতা চায়। এছাড়া ভারতের অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীনের সঙ্গে ব্যাপক বিবাদ রয়েছে। অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে ভারত ও চীনের নিয়মিত সংঘাত লেগেই থাকে এবং ইতোপূর্বে ভারত ও চীনের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছে। এসব কারণে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে দ্রুত সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট প্রয়োজন। এছাড়া বর্তমানে ভারতের শিলিগুড়ি দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সড়ক ও রেলযোগাযোগ আছে, যা শিলিগুড়ি করিডোর যা চিকন নেক বলে পরিচিত। এই শিলিগুড়ি করিডোর চীনের কাছাকাছি হওয়ায় ভারত তার সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর নিরাপদ রাস্তা হিসেবে বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট ব্যাবহার করতে চাইছে। এসব কারণে ভারতকে রেল ট্রানজিট দেয়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা: ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে রেলযোগে দেশের এক অংশ থেকে আরেক অংশে সরাসরি নিজেদের পণ্য পরিবহনের সুবিধা পাবে ভারত, যা দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি চেয়ে আসছিল বলে প্রচার আছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাদের সাথে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া গেছে তা হলো তারা মনে করেন ভারতকে রেল ট্রানজিট দেয়ার খবরে সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার প্রেক্ষাপটে এটিই আগামী দিনের বড় রাজনৈতিক ইস্যু হবে বলে তাদের ধারণা। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভাতেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এদিকে ভারত ইস্যু ইদানীং বেশ জমে উঠেছে। বিশেষ করে বিরোধী দল বিএনপি ও সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে রীতিমত রাজনৈতিক তর্কবিতর্ক চলছে। ভারত নিয়ে প্রকাশ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। পাশাপাশি নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ বিরোধী কয়েকটি দলের তৎপরতায় শুরু হওয়া কথিত ইন্ডিয়া আউট বা ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ক্যাম্পেইন, সেটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও ডালপালা মেলেছে। আবার ভারত বিরোধী এ প্রচারণা নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে অনেকে একে ট্র্যাডিশনাল ভারত বিরোধী রাজনীতি হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কী এনেছেন এবার ভারত থেকে? পানির কথা কোথাও নেই। যেটা আছে, সেটা ভয়াবহ। সেটা হচ্ছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির জন্য ভারত ভালো প্রস্তাব দিয়েছে, চীনও দিয়েছে। পক্ষান্তরে আপনি যেটা করেছেন, তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যা; সেটা বাতিল করে দিলেন। অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন সমস্যা, সমস্যা রইলো না। এবার বাংলাদেশকে পুরোপুরি ভারতের কাছে জিম্মি করে দিচ্ছেন। পৃথিবীর কোন দেশ আছে, যেখানে সীমান্তে তার বন্ধু দেশের নাগরিকদের হত্যা করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আজ বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আপনারা দেখেছেন, যেসব চুক্তি ও সমঝোতা করা হচ্ছে, এর কোনোটাই বাংলাদেশের পক্ষে নয়। তিনি আরও বলেন, ভারত এ যাবতকাল ধরে যা যা চাইছিল তার সবই আওয়ামী লীগ সরকার দিয়ে দিয়েছে। দর কষাকষির জন্য যে দু একটি টুলস হাতে রাখতে হয় সেটি পর্যন্ত রাখেনি। তিনি বলেন, অথচ এ সবের বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি। বরং পানি ও সীমান্ত হত্যার মতো বিষয়গুলো আলোচনাতেই নেই। দেশের প্রতিটি মানুষ ক্ষুব্ধ। আমরা সব দলের সাথে কথা বলছি। এর বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে সোচ্চার হবো। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, এটিই হবে আগামী দিনের বড় রাজনৈতিক ইস্যু এবং এর বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। তিনি বলেন, পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা সব ভুলিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ফিরেছেন। রেল ট্রানজিট ইস্যুকে ঠিকমতো ব্যবহার না করে একতরফা ছেড়ে দিয়েছে সরকার। এটি কেউ মানবে না। একইসুরে কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। তিনি গত শুক্রবার (২৮জুন) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে দলের এক সমাবেশে বলেছেন, সরকার ভারতের সাথে গোলামি চুক্তি করেছে, যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কিছুই নেই। তিস্তার কথা নেই। পানির কথা নেই। সীমান্ত হত্যা নিয়ে চুক্তি নেই। চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের বুকের ওপর দিয়ে ট্রেন ভারতে যাবে। নৌ বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দিতে হবে। এ চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না বলে কঠোর হুসিয়ারি দেন তিন। এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে জামায়াতে ইসলামীও। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকগুলোর তীব্র সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামী বলছে, আওয়ামী লীগ প্রতিবারই প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করে ভারতের হস্তক্ষেপে বারবার ক্ষমতায় আসে। ফলে জনসমর্থনহীন আওয়ামী লীগ সরকারকে বরাবরই ভারতকে তুষ্ট করতে হয়।
দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ চায় জাতীয় পার্টি: বিএনপি-ইসলামী আন্দোলন অব বাংলাদেশ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি কিংবা জামায়াতে ইসলামীই নয়, দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ চায় জাতীয় পার্টি। তবে রেল ট্রানজিটসহ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে যেসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, চুক্তিতে কী আছে বিস্তারিত কেউ তা জানে না এবং সরকারও তা প্রকাশ করেনি। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই যেকোনো দেশের সাথে চুক্তি হতে হবে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট, যাতে উভয় পক্ষ সমানে সমানে লাভবান হতে পারে। তিনি বলেন, ছাড় দিয়ে বাংলাদেশ কী পাচ্ছে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে কোন বিষয় কতটুকু ছাড় দেয়া হবে এবং তারা বিনিময়ে কী দিচ্ছে তার সব হতে হবে সমানে সমান। তিনি বলেন, আমরা শুধু চাইবো চুক্তি বা সমঝোতা যাই হোক তাতে দেশের স্বার্থ সংরক্ষিত হতে হবে এবং উভয় দেশ যেন লাভবান হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে তা মোকাবিলা করে গণতন্ত্র রক্ষায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ভারতের সঙ্গে হওয়া সমঝোতা নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে বিরোধীরা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলেও মন্তব্য করেন নেতারা। এ সময় সব প্রতিকূলতা, ষড়যন্ত্র ও অপ্রপ্রচার মাড়িয়ে গণতান্ত্রিক ধারাকে শক্তিশালী রাখতে কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
এর আগে গত মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ বলেছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তিনি দেশকে বিক্রি করেন না। তিনি বলেন, আমি সব সময় দেশের স্বার্থ রক্ষা করে চলি। শেখ হাসিনা এ দেশকে বিক্রি করে না। কারণ আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। তিনি আরো বলেন, যত ছোট হোক, এটা আমাদের সার্বভৌম দেশ। সেই সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও স্বকীয়তা বজায় রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে কাজ করছি। দেশের মানুষের কল্যাণের কথা মাথায় রেখেই ভারতের সাথে রেল যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজারকে অস্থিতিশীল করে পণ্যের দাম বাড়ানো। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সব ভারতীয় পণ্য বাদ দিয়ে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থা কখনও ঠিক রাখা যাবে? তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, বিরোধী দলগুলো চেষ্টা করতে পারে কিন্তু তাতে জনগণের সমর্থন থাকবে না বলে তিনি মনে করেন। তার মতে ভারতের সাথে কানেক্টিভিটির কারণে মানুষ উপকৃত হচ্ছে বলে রাজনীতির মাঠে ভারত ইস্যুর এখন আর কোনো গুরুত্বই নেই। তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো যেকোনো ইস্যু নিয়েই এগুতে পারে, কিন্তু সেটাতে জনগণের সমর্থন তো পেতে হবে।
বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, রেল ট্রানজিটের বিষয় রাজনৈতিক ময়দানে বড় কোন ইস্যু হয়ে উঠবে কি-না, সেটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, ভারতের সাথে হওয়া চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক নিয়ে ইস্যুতে যা হচ্ছে সেটা হলো রাজনৈতিক বাহাস এবং তিনি মনে করেন এটি তখনই ইস্যু হবে যখন সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে। দেখার বিষয় হবে বিরোধী দল গুলো সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে কি-না। সেটি না করতে পারলে সরকারের জন্য খুব একটা চিন্তার কারণ হবে বলে মনে হয় না। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের রেল ট্রানজিট ও তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারতের নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মোট দশটি সমঝোতা স্মারকে সই করে দুই দেশ। গত ২২জুন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারে ১০টি সমঝোতা স্মারক ও নথি সই করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। এরমধ্যে পাঁচটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই, তিন সমঝোতা স্মারক নবায়ন এবং ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্র হিসেবে যৌথ কার্যক্রমের দুটি নথিতে সই করে উভয় দেশ।

 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য